উপদেষ্টা আসিফের বাবার মদদে ৩ হত্যা গ্রেফতার চায় পরিবার
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা বিল্লাল হোসেনকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন কুমিল্লার মুরাদনগরের রুমা আক্তার।
সোমবার (৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত ৩ জুলাই উপদেষ্টার বাবার মদদে তার মা ভাই ও বোনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সেদিন তাকেও কুপিয়ে জখম করে। কিন্তু ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তিনি। মামলা করলেও প্রধান আসামি উপদেষ্টার বাবার নাম বাদ দিয়ে পুলিশ ইচ্ছেমতো অধিকাংশ আসামিদের নাম দেয়।
ঘটনার দিন ট্রিপল নাইনে ফোন দিয়েও প্রতিকার পাননি অভিযোগ করে রুমা আক্তার বলেন, উল্টো পুলিশের উপস্থিতিতে হত্যা নিশ্চিত করা হয়। ঘটনার পর মামলা করা হলেও আসামিদের ভয়ে পরিবার নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয়ভাবেই আমাদের পরিবারের মানুষ বিশেষ করে আমার মা ছিলেন জনপ্রিয়। স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে দুইবার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনও করেছিলেন। বিএনপি সমর্থিত হওয়ায় বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এই সন্ত্রাসীরা আমার মাকে বিজয়ী হতে দেয়নি। উল্টো জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তখন থেকেই হয়রানি করার জন্য বিভিন্ন মামলাও দিয়ে আসছিল। এমনকি মানহানি করার জন্য মাদক এবং চাঁদাবাজির মতো মামলাতেও আমার মায়ের নাম দিয়ে বদনাম করার অপচেষ্টা করে আসছিল। কারণ, নির্বাচিত না হলেও এলাকার মানুষ তাদের যেকোনো বিপদ-আপদ এবং বিচার-সালিশের জন্য আমার মায়ের কাছেই আসত, যা তাদের জন্য ছিল বড় ঈর্ষার কারণ।
যেভাবে মব তৈরি করে হত্যা করা হয় সেই বর্ণনা দিতে গিয়ে রুমা বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনার একদিন আগে মোবাইল চুরির ঘটনা নিয়ে শুরু হয় হট্টগোল। চুরির কারণে একটা ছেলেকে আমাদের গ্রামের রবিউলের বাড়িতে মারধর করা হলে, তার বাবা এসে কোনোভাবেই তার ছেলেকে বাঁচাতে না পেরে আমার মায়ের কাছে এসে সাহায্য চায়। তখন আমার মা সেখানে গিয়ে তাদের বলে, চোরটা যদি মরে যায় তাহলে তো আমরা আশেপাশের সবাই ফেঁসে যাব। হয় তাকে ছেড়ে দাও, না হয় পুলিশে দাও। এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে থাকা বাচ্চু মেম্বার, রবি, শরিফ, বাছিদ, রফিক, আবু বক্কর, হারুনরা একযোগে বলে ওঠে এই তুই চোরের পক্ষ ধরে আসছিস কেন? তুই নিজেও চোর এই বলে মায়ের উপরও চড়াও হয়। আমার ভাই তা শুনে দৌড়ে গিয়ে আমার মাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এদিকে, সেই চোরকে সেখান থেকে নিয়ে অন্যত্র চলে যায় শরীফের লোকজন। ছেলের খোঁজ না পেয়ে চোরের বাবা বাঙ্গরা বাজার থানায় অভিযোগ করলে, বাচ্চু মেম্বার, রবিউল এবং শরীফের লোকজন আমার মা’কে সন্দেহ করে যে, আমার মা তাকে সহায়তা করেছে। এই অভিযোগে দুই জুলাই রাতে কড়ইবাড়ি গ্রামের তারু মিয়ার বাড়িতে শিমুল বিল্লাহ চেয়ারম্যান, আনু মেম্বার এর উপস্থিতিতে বাচ্চু মেম্বার, রবিউল ও শরিফের আহ্বানে এক গোগন বৈঠক হয়। সেখানে প্রথমে আমার মা’কে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়, পরবর্তীতে আমরা বিচারপ্রার্থী হবো এই ভয়ে আমাদেরও শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তারা।