কুমিল্লার মুরাদনগরের ধর্ষণের ভিডিও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট
কুমিল্লার মুরাদ নগরে ধর্ষণের ঘটনায় ধারণ করা সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রোববার (২৯ জুন) দুপুরে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ মনসুর আলমের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে নির্যাতুক্ত ওই নারীর সুরক্ষা নিশ্চিত, ক্ষতিপূরণ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিও অপসারণ বিষয়ে রিট করেন আইনজীবী মীর এ কে এম নুরুন্নবী। এ ঘটনায় থানায় মামলা হওয়ায়, মামলা তার গতিতেই চলবে উল্লেখ করে, ধর্ষণের শিকার নারীকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। এছাড়া, হাইকোর্টকে ১৫ দিনের মধ্যে মামলার তদন্তের অগ্রগতি জানাতে বলা হয়েছে।
এর আগে মুরাদনগরের একটি গ্রামে বসতঘরের দরজা ভেঙে এক নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগের ওই ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান।
এই ঘটনায় গত শুক্রবার দুপুরে মুরাদনগর থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী ওই নারী। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে মূল অভিযুক্ত ফজর আলীকে আজ ভোর পাঁচটার দিকে ঢাকার সায়েদাবাদ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওই নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে । তাঁরা হলেন মো. সুমন, রমজান আলী, মো. আরিফ ও মো. অনিক। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বাড়ি মুরাদনগর উপজেলায়।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী ওই নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হিন্দু ধর্মাবলম্বী ওই নারী প্রায় ১৫ দিন আগে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে বাবার বাড়ির পাশে পূজা হচ্ছিল। পরিবারের সদস্যরা সেখানে গিয়েছিলেন; তিনি বাড়িতে একা ছিলেন। আনুমানিক ১০টার দিকে ফজর আলী (৩৮) নামের এক ব্যক্তি তাঁর বাবার বাড়ি গিয়ে ঘরের দরজা খুলতে বলেন। এ সময় তিনি দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করেন।
ওই নারীর পাশের বাড়ির এক বাসিন্দা বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে ওই বাড়িতে অনেক শব্দ হচ্ছিল। আমি ভয়ে দৌড়ে গিয়ে লোকজন ডেকে নিয়ে আসি। লোকজন গিয়ে দেখেন দরজা ভাঙা। পরে আমরা ওই নারীকে উদ্ধার করি। এ সময় কিছু লোক তাঁকে মারধর ও ভিডিও করেন। পরে তাঁরা বুঝতে পারেন ওই নারীর ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। তখন লোকজন ফজর আলীকে মারধর করেন। পরে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।’ ওই হাসপাতাল থেকে ফজর আলী পালিয়ে যান। পরে আজ তাঁকে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় একটি ভিডিও গতকাল শনিবার রাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা করার পর পুলিশ অভিযানে নামে। ভুক্তভোগী নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।